এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম : কৃষক পর্যায়ে ১৮ টন ধান বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, গত বোরো মৌসুমে কোটালীপাড়া উপজেলার কৃষকরা ‘কৃষক পর্যায়ে ধান,গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের’ আওতায় ১৮ টন ধান বীজ উৎপাদন করেন। এরমধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০, ব্রিধান-৭৪ ও ব্রিধান-৮৯। ইতিমধ্যে কৃষকরা ৮ মেটিক টন ধান বীজ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) কাছে বিক্রি করেছেন।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ৩ টন বীজ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ক্রয় করেছে। কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের দেবগ্রামের কৃষক স্বপন বিশ্বাস ও পরিমল গাঙ্গুলির কাছ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে বিএডিসি ৩ টন ধান বীজ কিনে নেয়। এরআগে কোটালীপাড়ার কৃষকদের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় ৫ টন ধান বীজ ক্রয় করে। এখনও কৃষকরে হাতে ১০ টন ধানবীজ মজুদ রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। বীজ ধান উৎপাদন করে কৃষক ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের দেবগ্রামের কৃষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, এ বছর বীজ ধান উৎপাদন করেছি। প্রতিমণ বীজ ধান ১ হাজার ৬৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। ধান সাধারণত ১ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। বীজ ধানে প্রতি মণে প্রায় ৭০০ টাকা বেশি পেয়েছি। তাই বীজ ধান চাষ লাভ জনক। এ বীজধান চাষে কৃষি অধিদপ্তরসহ সবার সহযোগিতা, ট্রেনিং ও পরামর্শ পাওয়া যায়। আমি কিছু বীজ বিএডিসির কাছে বিক্রি করেছি। আরো কিছু বীজ আমার কাছে আছে। এ বীজ দিয়ে আগামী বোরো মৌসুমে আমি আমার জমি চাষাবাদ করব। অন্য চাষিরা ও আমার কাছ থেকে বীজ কিনে নিয়ে চাষাবাদ করবেন বলে আমাকে জানিয়ে রেখেছেন। এ কারণে আগামী বছর আমাদের এলাকায় ধান বীজের আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
গোপালগঞ্জ জেলা বীজ প্রত্যয়ণ কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক বলেন, কোটালীপাড়ায় কৃষকের উৎপাদিত বীজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে মান খুবই ভালো তাই এ বীজ, প্যাকেটজাত করণ, বিপণনসহ সব ধরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে বীজ উৎপাদন একটি বড় ভূমিকা রাখবে। তারা কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে বীজ উৎপাদন করছে। বীজ বিক্রি করে তারা ভালো দাম পাচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ কৃষক উৎপাদন করছে। এটি সংরক্ষণ ও চাষাবাদ সম্প্রসারণ করলে দেশে খাদ্য উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। এ লক্ষ্যেই সরকার ‘কৃষকপর্যায়ে ধান,গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্প’ প্রণয়ন করেছে। কোটালীপাড়ার কৃষকরা এটি বাস্তবায়ন করেছে। এতে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে ।